লালন শাহ এর গান সে করণ সিদ্ধি করা সামন্যের কাজ নয়- আজকের আয়োজন
Table of Contents
সে করণ সিদ্ধি করা সামন্যের কাজ নয়
সে করণ সিদ্ধি করা সামনের কাজ নয়
গরল হতে সুধা নিতে আতসে প্রাণ যায় ॥
সাপের মুখে নাচায় বেঙ্গা
এ বড় আজব রঙ্গা
রসিক যদি হয় রে ঘোঙ্গা
তারে ওমনি ধরে খায় ॥
ধন্বন্তরী গুণ শিখিলে
সে মানে না রূপের কালে
সে গুণ তার উল্টিয়ে ফেলে
মস্তকে দংশায়
আত্মতত্ত্বের যে অনুরাগী
নিষ্ঠারতি ভড়ং ত্যাগী
লালন বলে রসিক যোগী
সে-তো আমার কাৰ্য নয় ॥
লালনের কয়েকজন গায়ক
বাউল গানের কিংবদন্তি শাহ আবদুল করিমের গান কথা বলে ভাটি অঞ্চলের মানুষের জীবনের সুখ প্রেম-ভালোবাসার পাশাপাশি সকল অন্যায়, অবিচার, কুসংস্কার আর সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে। তিনি তার গানের অনুপ্রেরণা পেয়েছেন প্রখ্যাত বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ, পুঞ্জু শাহ এবং দুদ্দু শাহ এর দর্শন থেকে।
তিনি আধ্যাত্নিক ও বাউল গানের দীক্ষা লাভ করেছেন কামাল উদ্দিন, সাধক রশিদ উদ্দিন, শাহ ইব্রাহীম মাস্তান বকশ এর কাছ থেকে। তিনি শরীয়তী, মারফতি, নবুয়ত, বেলায়া সহ সবধরনের বাউল গান এবং গানের অন্যান্য শাখার চর্চাও করেছেন।বাউল গানের শিল্পী, গীতিকার ও সুরকার শাহ আলম সরকার পারিবারিকভাবেই বাউল গানের সাথে যুক্ত তিনি।
গান করতে গিয়ে পড়াশোনা ছেড়ে দিলেও গান নিয়েই তার পড়ালেখা বলে মনে করেন এই শিল্পী। তার পরিচিতি মূলত তার লেখা ও সুর করা সেসব গান দিয়ে যেগুলো শিল্পী মমতাজ বেগম গেয়েছেন। মমতাজের জন্য ৭০ এর বেশি অ্যালবাম তৈরি করে দিয়েছেন তিনি। এছাড়াও তিনি জানান তার নিজের অ্যালবামের সংখ্যা প্রায় ৬৫০।
বৈশাখের অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় রাতভর পালা গান গেয়ে থাকেন শাহ আলম সরকার। মমতাজের বাইরেও চলচ্চিত্রে রুনা লায়লা, সাবিনা ইয়াসমিন, অ্যান্ড্রু কিশোর, কনক চাঁপা আরও অনেকে গেয়েছেন তার গান।পবন দাস বাউল এবং বাউল গানের প্রসারে তার ভূমিকা- বাউল গানের একনিষ্ঠ সাধক, যার নামেই রয়েছে বাউলের ছোঁয়া।
এক নামেই গোটা বিশ্বে পরিচিতি ধারণ করেছে তার নিরলস চেষ্টায়, হয়ে উঠেছে বাউল গানের একনিষ্ঠ উপাসক। ভক্তি থেকেই সাধনা আর সাধনা থেকেই ধ্যান-জ্ঞান। বাউল গানের কথা আসলেই যে ক জনের মুখ চোখে ভাসে তাদের মধ্যে পবন দাস উন্নতম একজন। যাকে বাউল গানের মডেল বললেও বাড়িয়ে বলা হবে না।
বাউল গানের সাধনা আরো অনেকেই করেছে, করছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক ভাবে তার মতো খ্যাতি আর কেউ অর্জন করেছেন বলে জানা নেই। আশির দশক থেকেই নিজ দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিশ্ব ব্রমান্ডে বেড়িয়ে পরে বাউল গানের প্রচারনায়। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ব্যাপক সাড়া জাগাতে শুরু করে তার গায়কি।
বাউল গানের- ভক্ত হয়ে উঠে ইউরোপের লক্ষ লক্ষ সংগীত প্রেমি। আর তাদের তাগিদেই মাঝে মাঝেই পাড়ি দিতে হতো ফ্রান্সে। শুধু শ্রতাকুলই না, অনেক নামী-দামী সংগীত শিল্পীও তার গায়কীর ভক্ত হয়ে যায়। আর সেই সুবাদের বিশ্বখ্যাত অনেক শিল্পীদের সাথে গান করে। ১৯৯৭ সালের আগ পর্যন্ত ফ্রান্সে মাঝে মাঝেই যেতে হতো।
কনসার্ট বা বিভিন্ন সংগীত বিষয়ক অনুস্ঠানে অংশ নিতে। হয়তো বাংলার চাইতে সেখানেই তার ভক্তকূলের পরিধি বেড়ে গিয়েছিল। ফরাসীরাও তাকে কম দেইনি, ১৯৭৯ সালে তার জীবন/বাউলদের জীবন নিয়ে পুরো একটা সিনেমা/ডকুমেন্টারী বানিয়ে ফেলেন ফরাসী সরকার। ১৯৭৭ সালের শুরু করেন সেই সিনেমার চিত্রগ্রহণ।
সিনেমাটিতে দেখানো হয় ৭ বছরের ছেলে কার্তিক কীভাবে বাউলদের কাছ থেকে তালিম নেয়। এখানে পবন দাস ছাড়াও আরো অনেক বাউল শিল্পী অংশ নেয়। ১৯৭৯ সালে ছিনেমাটি “Le Chants Des Fou’ (বাউলের গান/Songs of the Mad People) টাইটেলে ফ্রান্সে মুক্তি পায় এবং ফ্রান্স ছাড়াও ইউরোপের অনেক দেশেই টেলিকাস্ট করে। যা মূলত পাবন দাস বাউলের প্রতি ফরাসীদের কৃতজ্ঞতার বর্হিঃপ্রকাশ।
আরও দেখুন :