কাঙাল হরিনাথের গান নিয়ে আজকের আয়োজন। হরিনাথ মজুমদার যিনি কাঙাল হরিনাথ নামে সমধিক পরিচিত (জন্ম: ২২ জুলাই,: ১৮৩৩ – মৃত্যু: ১৬ এপ্রিল, ১৮৯৬) তিনি ঊনবিংশ শতাব্দীর বাংলা লোকসংস্কৃতির অন্যতম ধারক ও বাহক। তিনি বাউল সঙ্গীতের অন্যতম পথিকৃৎ ছিলেন। তিনি সর্বসমক্ষে ফকির চাঁদ বাউল নামেও পরিচিত ছিলেন। অধিকন্তু তিনি গ্রামবার্তা প্রকাশিকা পত্রিকা প্রকাশের জন্যও প্রসিদ্ধ। ২০১৭ সালে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর কুষ্টিয়ায় তার স্মরণে “কাঙাল হরিনাথ জাদুঘর” প্রতিষ্ঠা করে।
Table of Contents
কাঙাল হরিনাথের গানঃ
দীর্ঘ আঠারো বছর ‘গ্রামবার্তা প্রকাশিকা’ সম্পাদনা করার পর সাংবাদিকতা পেশা পরিত্যাগপূর্বক ধর্ম সাধনায় মনোনিবেশ করেন তিনি। হরিনাথ মজুমদার আধ্যাত্মিক গুরু ও মহান সাধক ফকির লালনের গানের একান্ত অনুরাগী ছিলেন।
ধর্মভাব প্রচারের জন্য ১৮৮০ সালে তিনি নিজস্ব একটি বাউল সঙ্গীতের দল প্রতিষ্ঠা করেন। দলটি কাঙ্গাল ফকির চাঁদের দল নামে পরিচিতি ছিল। হরিনাথের স্বরচিত গানগুলোও আধ্যাত্মিকতায় ভরপুর ছিল। গান রচনায় তিনি অসম্ভব পারদর্শিতা ও পারঙ্গমতা প্রদর্শন করেন। স্বলিখিত গানে কাঙ্গাল ভণিতার ব্যবহার বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয় ছিল। তাঁর রচিত বাউল সঙ্গীতগুলো ফকির চাঁদের বাউল সঙ্গীত নামে সুপ্রসিদ্ধ ছিল। ধর্ম সাধনার অঙ্গরূপে তিনি বহু সহজ-সুরের গান রচনা করে সদলবলে সেই গান গেয়ে বেড়াতেন। হরি দিন তো গেল সন্ধ্যা হ’ল গানটি তাঁর উল্লেখযোগ্য রচনা।
হরি দিন তো গেল সন্ধ্যা হ’ল
ওহে (হরি) দিন তো গেল, সন্ধ্যা হল, পার কর আমারে।
তুমি পারের কর্তা, শুনে বার্তা, ডাকছি হে তোমারে।।
আমি আগে এসে, ঘাটে রইলাম বসে
(ওহে, আমায় কি পার করবে নাহে, আমায় অধম বলে)
যারা পাছে এল, আগে গেল, আমি রইলাম পড়ে।।
যাদের পথ-সম্বল, আছে সাধনার বল,
(তারা পারে গেল আপন বলে হে)
(আমি সাধনহীন তাই রইলেম পড়ে হে)
তারা নিজ বলে গেল চলে, অকুল পারাবারে।।
শুনি, কড়ি নাই যার, তুমি কর তারেও পার,
(আমি সেই কথা শুনে ঘাটে এলাম হে)
( দয়াময় ! নামে ভরসা বেঁধে হে )
আমি দীন ভিখারী, নাইক কড়ি, দেখ ঝুলি ঝেড়ে।।
আমার পারের সম্বল, দয়াল নামটি কেবল,
(তাই দয়াময় বলে ডাকি তোমায় হে)
(তাই অধমতারণ বলে ডাকি হে)
ফিকির কেঁদে আকুল, পড়ে অকূল সাঁতারে পাথারে।।|
আরও পড়ুনঃ