মোকসেদ আলী সাঁইয়ের গান নিয়ে আজকের আয়োজন।তিনি জন্মগ্রহণ করেন ১৯৩৫ (মতান্তরে ১৯৩৩) খ্রিষ্টাব্দে কুষ্টিয়া শহরের হরিশঙ্করপুর গ্রামে। বাবার নাম আবদুর রশিদ খান। মা-নিগার নেছা। পিতৃ-পদবি ‘খান’; ‘সাঁই’ তাঁর নিজের আরোপিত।
Table of Contents
মোকসেদ আলী সাঁইয়ের গানঃ
মোকসেদ আলী সাঁই লালনগীতির পরিশীলিত কণ্ঠশিল্পী ছিলেন, সাধক ছিলেন না। নামের শেষে পূর্বপুরুষের পদবি ‘খান’ বাদ দিয়ে নিজে ‘সাঁই’ যোগ করেছিলেন; এবং সে নামেই তিনি বেশি পরিচিত। প্রথম জীবনে শাস্ত্রীয় সংগীত ছাড়াও অনুশীলন করতেন গণসংগীত, নজরুলগীতি ও অন্যান্য সংগীত। যাত্রা দলেও ছিলেন কিছুকাল।
পেশা হিসেবে কুষ্টিয়া তহশিল অফিসে এসএ জরিপকালে (১৯৬২) অস্থায়ীভাবে নিয়োজিত থাকার পরে আনসার কমান্ডার হিসেবে চাকরি করেছেন ১৯৭১-এর আগে। শাস্ত্রীয় সংগীত চর্চায় তাঁর প্রথম শিক্ষাগুরু ওস্তাদ ওসমান গণি। গত শতাব্দীর ষাটের দশকে কয়েকজন শুভাকাঙ্ক্ষীর দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে লালনগীতি শেখার প্রতি বিশেষ মনোযোগী হন।
১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে দেশভাগের আগে অমূল্য শাহ নামের এক বিশিষ্ট লালনগীতির কণ্ঠশিল্পী বর্ধমান-বীরভূম অঞ্চলের বাউলদের অনুসরণে ডান হাতে একতারা এবং বাঁ হাতে বায়া বাজিয়ে বিভিন্ন আসরে দাঁড়িয়ে লালনের গান গাইতে শুরু করলে লালনগীতি পরিবেশনের একটি নতুন ধারা প্রবর্তিত হয়। পরবর্তী সময়ে এ ধারাটি বজায় ছিল সুকণ্ঠের অধিকারী বেহাল শাহ, নিমাই শাহ, খোদা বক্স শাহ (জাঁহাপুর) প্রমুখের মাধ্যমে।

ভজন পুজন সাধ্য সাধন
ভজন পুজন সাধ্য সাধন
যার যেমন মন তেমনি হয়
ঘরে পায় কেউ দূরের খবর
কেউ বা দেশ বিদেশে ধায়।।
গুরু দ্বারে জানিলিনে মন
কিসে হবে ভজন সাধন
অচেনা আন্দাজী জাজন
পৌঁছেনাক ঠিকানায়।।
সত্য প্রেমিক যে জনা হয়
পথের সন্ধান ঠিক জেনে নেয়
ভিয়ান যোগে পাক সে নামায়
হারায় না ধন খানা ডোবায়।।
কেউ বলে ভাই অটল ভাল
ত্যাজেছে কেউ টলাটল
যোগান্তরে সব বিফল
_____ শুধু কলঙ্ক রয়।।
নূর অংশ মোর এই দেহেতে
নূর অংশ মোর এই দেহেতে
কোন খানে আছে
শুনি নূরেতে নূর মিশাইয়া
দেশের সকল অঙ্গ আমার
আপন আপনি নামে প্রচার
নূর নামে কোন বস্তু গো তার
কোথায় মিশেছে।।
কেউ বলে নূর দীপ্তকারময়
দীপ্ত হয়েই সৰ্ব্বদা রয়
নুরোতেই নূরের আশ্রয়
আমার আধার যায় কিসে।।
এইবার যদি নূর না চিনি
জন্ম মৃত্যু কেবল হয়রানি
বল মুর্শিদ গুণমণি
মকছেদের ঘোর যাক ঘুঁচে।।
আরও পরুনঃ