হাহাকারে একা ছিল হুহুংকারে দোসর হ’ল-লালন শাহ

লালন শাহ এর গান হাহাকারে একা ছিল হুহুংকারে দোসর হ’ল- আজকের আয়োজন

হাহাকারে একা ছিল হুহুংকারে দোসর হ’ল

 

হাহাকারে একা ছিল হুহুংকারে দোসর হ’ল-লালন শাহ

হাহাকারে একা ছিল হুহুংকারে দোসর হ’ল ।

গুপ্তকথা বলতে আমায় কত নিষেধ করেছিল ॥

হুহুংকার ছাড়িল যখন

খুলে গেল নূরের বসন

সেই সময় বরকতকে তখন

মা বোল বলে ডেকেছিল ॥

খুলিলেন মা হাতের কঙ্কণী

কেন বসন মা গো খুলিলেন আপনি

হাসান হোসেন কানের বালি

নবি আলি পাঁচজন হ’ল ৷

কুদরতে হয় নূর সিতারা

তাইতে মা তোর নাম জহুরা

হয়ে লালন দিশেহারা

জহুরা রূপ প্রকাশিল ॥

 

হাহাকারে একা ছিল হুহুংকারে দোসর হ’ল-লালন শাহ

 

লালনের গানের সংগ্রহ

লালনের গান “লালনগীতি” বা কখনও “লালন সংগীত” হিসেবে প্রসিদ্ধ। লালন মুখে মুখে গান রচনা করতেন এবং সুর করে পরিবেশন করতেন। এ ভাবেই তার বিশাল গান রচনার ভাণ্ডার গড়ে ওঠে। তিনি সহস্রাধিক গান রচনা করেছেন বলে ধারণা করা হয়। তবে তিনি নিজে তা লিপিবদ্ধ করেন নি।

তার শিষ্যরা গান মনে রাখতো আর পরবর্তীকালে লিপিকার তা লিপিবদ্ধ করতেন। আর এতে করে তার অনেক গানই লিপিবদ্ধ করা হয় নি বলে ধারণা করা হয়। বাউলদের জন্য তিনি যেসব গান রচনা করেন, তা কালে-কালে এত জনপ্রিয়তা লাভ করে যে মানুষ এর মুখে মুখে তা পুরো বাংলায় ছড়িয়ে পড়ে।

কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লালনের গানে প্রভাবিত হয়ে, প্রবাসী পত্রিকার ‘হারামণি’ বিভাগে লালনের কুড়িটি গান প্রকাশ করেন। মুহম্মদ মনসুরউদ্দিন একাই তিন শতাধিক লালন গীতি সংগ্রহ করেছেন যা তার হারামণি গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে। এ ছাড়াও তার অন্য দুটি গ্রন্থের শিরোনাম যথাক্রমে ‘লালন ফকিরের গান’ এবং ‘লালন গীতিকা’ যাতে বহু লালন গীতি সংকলিত হয়েছে।

জ্যোতিরিন্দ্রিনাথ ঠাকুর সম্পাদিত ‘বীণা’, ‘বাদিনী’ পত্রিকায় ৭ম সংখ্যা ২ ভাগ (মাঘ) ১৩০৫-এ ‘পারমার্থিক গান’ শিরোনামে লালনের ‘ক্ষম অপরাধ ও দীননাথ’ গানটি স্বরলিপিসহ প্রকাশিত হয়। এ পত্রিকায় ৮ম সংখ্যা ২ ভাগ (ফাগুন) ১৩০৫-এ প্রকাশিত আরেকটি লালনগীতি ‘কথা কয় কাছে দেখা যায় না’ দুটি গানেরই স্বরলিপি করেন ইন্দিরা দেবী। প্রেমদাস বৈরাগী গীত এ লালন গীতি সংগ্রহ করেছিলেন মুহম্মদ মনসুরউদ্দীন এবং তা মাসিক প্রবাসী পত্রিকার হারামণি অংশে প্রকাশিত হয়েছিল।

 

হাহাকারে একা ছিল হুহুংকারে দোসর হ’ল-লালন শাহ

 

লালনের গানের কথা, সুর ও দর্শনকে বিভিন্ন গবেষক বিভিন্নভাবে উল্লেখ করেছেন। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, লালন গবেষক আবুল আহসান চৌধুরী বলেন, অনেক গান যাতে লালন বলে কথাটির উল্লেখ আছে তার সবই প্রকৃতপক্ষে লালনের নয়। মন্টু শাহ নামের একজন বাউল, তিন খণ্ডের একটি বই প্রকাশ করেছেন যাতে তিনি মনিরুদ্দিন শাহ নামক লালনের সরাসরি শিষ্যের সংগৃহীত লালন সংগীতগুলো প্রকাশ করেছেন।

আরও দেখুন :

হাহাকারে একা ছিল হুহুংকারে দোসর হ’ল-লালন শাহ

সখি সে হরি কেমন বল্‌ | নজরুল সঙ্গীত | কাজী নজরুল ইসলাম

Leave a Comment