লালন শাহ এর গান আজগবি বৈরাগ্য লীলা দেখতে পাই – নিয়ে আজকের আয়োজন।
Table of Contents
আজগবি বৈরাগ্য লীলা দেখতে পাই
আজগবি বৈরাগ্য লীলা দেখতে পাই ।
হাত বানানো চুল-দাড়ি-জট কোন ভাবের ভাবুক রে ভাই ॥
যাত্রাদলেতে দেখি
বেশ করিয়ে হয় রে যোগী
তমনি কত জাল বৈরাগী
বাসায় গেলে কিছুই নাই ॥
ফকির ও বৈষ্ণবের তরে
ভক্তিকে ভর্ৎসনা করে
এরা কী বুঝে বেহাল পরে
বললে কিছু শুনতে চাই ॥
না জানি এই কলির শেষে
আর কত রঙ উঠবে দেশে
লালন ভেড়োর দিন গিয়েছে
যে বাঁচো সে দেখবে ভাই ॥
লালন শাহ এর প্রসার
বাউল সম্রাট লালনের মাধ্যমেই বাউল গান সর্বসাধারণের কাছে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। একেবারেই প্রচারবিমুখ লালন সাঁই তার দীর্ঘ সংগীত জীবনে অসংখ্য বাউল গান সৃষ্টি করেন যা ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। এমনকি বর্তমান তরুণ প্রজন্মের কাছেও লালনের গান আধুনিকতার প্রতীক হিসেবেই ধরা দিয়ে আসছে। মাটি, মানুষ, প্রকৃতি, জীবনবোধ, ধর্ম, প্রেম এবং দেশের কথাই বেশির ভাগ সময় ওঠে এসেছে লালনের গানে। লালনের গানের সংখ্যার তেমন কোন প্রামাণিক দলিল নেই।
তবে তার সৃষ্ট গান অসংখ্য হওয়ায় সব গান সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়নি। লালন সাঁই’র গান উপমহাদেশ ছাড়িয়ে সারা পৃথিবীতেই প্রশংসিত হয়েছে ব্যাপকভাবে। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের হাত ধরেই লালনের গান আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রবেশ করে। রবীন্দ্রনাথ লালনের গান সংগ্রহ করে ১৯২২ সালে ভারতীয় পত্রিকার হারামনি শাখায় চারভাগে ২০টি গান প্রকাশ করেন। লালন সাঁই’র বাউল-গানে উৎসাহী ও অনুপ্রাণিত হয়ে নিজেকে রবীন্দ্র-বাউল হিসেবে পরিচয় দিতেন স্বয়ং বিশ্বকবি।
লালনের গানের মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ হয়ে পরবর্তীতে উপমহাদেশে অসংখ্য বাউলের আবির্ভাব ঘটে, যারা পরবর্তীতে বেশ ভালভাবেই প্রতিষ্ঠা লাভ করেন। বাউল-গানকে সর্বোচ্চ অবস্থানে নিয়ে যেতে লালন সাঁই’র ভূমিকা ছিল অনস্বীকার্য। তার মৃত্যুর ১২৫ বছর পরও বিন্দুমাত্র ভাটা পড়েনি লালন সাঁই’র গানের চেতনায়। এখনও তরুণ প্রজন্ম উদ্বুদ্ধ হয় কিংবদন্তি এ বাউলের গানের মায়ায়। যে মায়ার টানে লালনের গান আজ পর্যন্ত তরুণ প্রজন্মের কণ্ঠে লালিত হয়ে আসছে দারুণভাবে।
এমনই অমূল্য গানের ভাণ্ডার বাউল গানের এ সম্রাট রেখে গেছেন, যার মাধ্যমে এভাবেই প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের হৃদয় আলোকিত হয়ে চলেছে।
আরও দেখুন :