লালন শাহ এর গান পূর্ণচন্দ্র উদয় কখন কর মন বিবেচনা- আজকের আয়োজন
Table of Contents
পূর্ণচন্দ্র উদয় কখন কর মন বিবেচনা
পূর্ণচন্দ্র উদয় কখন কর মন বিবেচনা।
আগমে আছে প্রকাশে ষোলকলাই পূর্ণশশী
পনেরই পূর্ণমাসী শুনে মনের ঘোর গেল না ॥
সাতাইশ নক্ষত্র সাঁইত্রিশ যোগেতে
কোন সময় চলে সাঁইত্রিশেতে
যোগের এমনি লক্ষণ, অমৃতফল স্থানে জানতো যদি দরিদ্রমন
অশুসার কিছু রইত না ॥
পূর্ণিমার যোগাযোগ হলে, শুকনা নদী উজান চলে
ত্রিবেণীর পিছল ঘাটে নিঃশব্দে বন্যা ছোটে
চাঁদ-চকোরের ভাটার চোটে
বাঁধ ভেঙ্গে যায় তৎক্ষণা ॥
নিচের চাঁদ রাহুতে ঘেরা, গগন চাঁদ কি পাব ধরা
যখন হয় রে অমাবস্যে, তখন চন্দ্র রয় কোন দেশে
লালন ফকির হারায় দিশে
চোখ থাকতে হয়ে কানা ॥
লালনের বিশ্ব সাহিত্যে প্রভাব
লালনের গান ও দর্শনের দ্বারা অনেক বিশ্বখ্যাত কবি, সাহিত্যিক, দার্শনিক প্রভাবিত হয়েছেন। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ লালনের মৃত্যুর ২ বছর পর তার আখড়া বাড়িতে যান এবং লালনের দর্শনে প্রভাবিত হয়ে ১৫০টি গান রচনা করেন।[৪৮] তার বিভিন্ন বক্তৃতা ও রচনায় তিনি লালনের প্রসঙ্গ তুলে ধরেছেন।
লালনের মানবতাবাদী দর্শনে প্রভাবিত হয়েছেন সাম্যবাদী কবি কাজী নজরুল ইসলাম। মার্কিন কবি এলেন গিন্সবার্গ লালনের দর্শনে প্রভাবিত হন এবং তার রচনাবলিতেও লালনের রচনাশৈলীর অনুকরণ দেখা যায়। তিনি আফটার লালন নামে একটি কবিতাও রচনা করেন।
লালনের সংগীত ও ধর্ম-দর্শন নিয়ে দেশ-বিদেশে নানা গবেষণা হয়েছে ও হচ্ছে। ১৯৬৩ ছেউড়িয়ায় আখড়া বাড়ি ঘিরে লালন লোকসাহিত্য কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর লালন লোকসাহিত্য কেন্দ্রের বিলুপ্তি ঘটিয়ে ১৯৭৮ সালে শিল্পকলা একাডেমীর অধীনে প্রতিষ্ঠিত হয় লালন একাডেমী।
তার মৃত্যুদিবসে ছেউড়িয়ার আখড়ায় স্মরণ উৎসব হয়। দেশ-বিদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে অসংখ্য মানুষ লালন স্মরণোৎসব ও দোল পূর্ণিমায় এই আধ্যাত্মিক সাধকের দর্শন অনুস্মরণ করতে প্রতি বছর এখানে এসে থাকেন। ২০১০ সাল থেকে এখানে পাঁচ দিনব্যাপী উৎসব হচ্ছে। এই অনুষ্ঠানটি “লালন উৎসব” হিসেবে পরিচিত। ২০১২ সালে এখানে ১২২তম লালন উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
আরও দেখুন :