লালন শাহ এর গান প্রেমবাজারে কে যাবি তোরা আয় গো আয়– আজকের আয়োজন
Table of Contents
প্রেমবাজারে কে যাবি তোরা আয় গো আয়
প্রেমবাজারে কে যাবি তোরা আয় গো আয় ।
প্রেমের গুরু কল্পতরু প্রেমরসে মেতে রয় ॥
প্রেমের রাজা মদনমোহন
নিহেতু প্রেম সাধনে ধরে
শ্যাম রাধার যুগল চরণ;
প্রেমের সহচরী হয় গোপীগণ
গোপীর দ্বারে বাঁধা হয় ॥
অবিম্বু উথলিয়ে নীর
পুরুষ-প্রকৃতি হরে কার
দোহার প্রেমশৃঙ্গার
প্রেমশৃঙ্গারে উভয় মেতে
শেষে লেনাদেনা হয় ॥
নির্মল প্রেম করে সাধন
শম্ভুরসে করে স্থিতি
সামান্য রতি নিরূপণ;
সিরাজ সাঁই কয় শোন রে লালন
তাতে শ্যাম অঙ্গ গৌরাঙ্গ হয় ॥
লালনের প্রসার
বাউল সম্রাট লালনের মাধ্যমেই বাউল গান সর্বসাধারণের কাছে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। একেবারেই প্রচারবিমুখ লালন সাঁই তার দীর্ঘ সংগীত জীবনে অসংখ্য বাউল গান সৃষ্টি করেন যা ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। এমনকি বর্তমান তরুণ প্রজন্মের কাছেও লালনের গান আধুনিকতার প্রতীক হিসেবেই ধরা দিয়ে আসছে।
মাটি, মানুষ, প্রকৃতি, জীবনবোধ, ধর্ম, প্রেম এবং দেশের কথাই বেশির ভাগ সময় ওঠে এসেছে লালনের গানে। লালনের গানের সংখ্যার তেমন কোন প্রামাণিক দলিল নেই। তবে তার সৃষ্ট গান অসংখ্য হওয়ায় সব গান সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়নি। লালন সাঁই’র গান উপমহাদেশ ছাড়িয়ে সারা পৃথিবীতেই প্রশংসিত হয়েছে ব্যাপকভাবে।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের হাত ধরেই লালনের গান আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রবেশ করে। রবীন্দ্রনাথ লালনের গান সংগ্রহ করে ১৯২২ সালে ভারতীয় পত্রিকার হারামনি শাখায় চারভাগে ২০টি গান প্রকাশ করেন। লালন সাঁই’র বাউল গানে উৎসাহী ও অনুপ্রাণিত হয়ে নিজেকে রবীন্দ্র-বাউল হিসেবে পরিচয় দিতেন স্বয়ং বিশ্বকবি।
লালনের গানের মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ হয়ে পরবর্তীতে উপমহাদেশে অসংখ্য বাউলের আবির্ভাব ঘটে, যারা পরবর্তীতে বেশ ভালভাবেই প্রতিষ্ঠা লাভ করেন। বাউল গানকে সর্বোচ্চ অবস্থানে নিয়ে যেতে লালন সাঁই’র ভূমিকা ছিল অনস্বীকার্য। তার মৃত্যুর ১২৫ বছর পরও বিন্দুমাত্র ভাটা পড়েনি লালন সাঁই’র গানের চেতনায়।
এখনও তরুণ প্রজন্ম উদ্বুদ্ধ হয় কিংবদন্তি এ বাউলের গানের মায়ায়। যে মায়ার টানে লালনের গান আজ পর্যন্ত তরুণ প্রজন্মের কণ্ঠে লালিত হয়ে আসছে দারুণভাবে। এমনই অমূল্য গানের ভাণ্ডার বাউল গানের এ সম্রাট রেখে গেছেন, যার মাধ্যমে এভাবেই প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের হৃদয় আলোকিত হয়ে চলেছে।
আরও দেখুন :