আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় বাউল ফকির কথা সূচিপত্র । বাউল ফকির কথা” রূপের আড়ালে উপাখ্যান। এই বইয়ের প্রতিপাদ্য আজকের বাংলায় বাউল-ফকিরদের প্রকৃত অবস্থান ও সাংসারিক অবস্থা, তাঁদের জীবনের ছন্দ, বাণী আর সুরের উৎস সন্ধান।
সুশৃঙ্খলভাবে সাজানো যাবতীয় জ্ঞাতব্য সারণি, বিস্তৃত তথ্যপঞ্জি ও ফকিরদের আত্মকথন— সেইসঙ্গে সংগৃহীত বাউল ও ফকিরি গান, স্বরলিপি ও আলোকচিত্র সম্ভারে অপরূপ এই রচনা ও তার প্রকাশগত শৈলী। বাংলা সংস্কৃতির নির্মাণে বহু বিচিত্র গৌণ ধর্মাচারীদের কাহিনি ও তাঁদের নারীজীবনের বর্ণবিভায় উদ্ভাসিত অন্তরমহল মরমি লেখনীতে ব্যক্ত হয়েছে।
বাউল-ফকিরদের দেহতত্ত্বের রহস্যময় আয়নার বিচ্ছুরণ এ বইকে স্বাদু ও আকর্ষণীয় করে তুলেছে। আবু তাহের ফকিরের লেখা ‘ফকিরি-নামা’ এবং লোকসংগীত বিশেষজ্ঞ দিনেন্দ্র চৌধুরীর সঙ্গে লেখকের আলাপচারি উল্লেখ্য সংযোজনে সমৃদ্ধ।
Table of Contents
বাউল ফকির কথা সূচিপত্র
- আত্মপক্ষ
- সূর্য আর শিশির
- আয়নামহলের কথা
- গোপ্য সাধনার ত্রিবেণী
- দেহের দেহলী
- সাধনসঙ্গিনীর রহস্যলোক
- ফানা থেকে বাকা
- ফকিরদের সঙ্গে দ্বিরালাপ
- ফকিরের আত্মকথা
- পুরুলিয়ার সাধু গান
- জেলাওয়ারি বাউল পরিচিতি
- ফকিরদের পঞ্জি
- বাউল গানের নানাবর্গ
- বাংলা ফকিরি গানের স্বর্ণসঞ্চয়
- বাউল-ফকিরি গানের স্বরলিপি ও স্বরলিপি প্রসঙ্গে
- বাউল-ফকিরি গানের সুর প্রসঙ্গে আলাপচারি
- পশ্চিমবঙ্গের বাউল, ফকির ও গায়কদের আর্থ-সামাজিক পরিচয় সারণি
- নির্দেশিকা
বাউল শিল্পী:-
বাউল শিল্পী বা বাউল সাধক বা বাউল একটি বিশেষ ধরনের গোষ্ঠী ও লোকাচার সঙ্গীত পরিবেশক, যারা গানের সাথে সাথে সুফিবাদ, দেহতত্ত্ব প্রভৃতি মতাদর্শ প্রচার করে থাকে। বাউল সাধক বাউল সঙ্গীত পরিবেশন করে থাকে। মূলত বাউল সংগীত একধরনের বাংলা সুফিবাদ সংগীত ছিল।
বাউল গান পঞ্চবিংশ শতাব্দীতে লক্ষ্য করা গেলেও মূলত কুষ্টিয়ার লালন সাঁইয়ের গানের মধ্য দিয়ে বাউল মত পরিচিতি লাভ করে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের নিকট। বাউলদের সাদামাটা জীবন ধারণ ও একতারা বাজিয়ে গান গেয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়ায়। ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দে ইউনেস্কো বিশ্বের মৌখিক এবং দৃশ্যমান ঐতিহ্যসমূহের মাঝে বাউলদের বাউল গানকে অন্যতম শ্রেষ্ঠ সম্পদ হিসেবে ঘোষণা করে।
বাংলার বাউল বা বাউল সংগীত অদ্যাবধি গবেষকেরা যেমন কোনো সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত দিতে পারেন নি। সাধারণত মানা হয় যে “বাউল” শব্দটি এসেছে আরবি শব্দ “বাউর” থেকে, যার অর্থ স্বেচ্ছাচারী, বিশৃঙ্খল বা উন্মাদ।
তবে বাউলের উৎপত্তি সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে কোনো এক গবেষক বলেছেন- সংস্কৃত “বায়ু” থেকে বাউল শব্দটির উৎপত্তি, বাংলার যে সব লোক “বায়ু” অর্থাৎ শ্বাস-প্রশ্বাস ক্রিয়ার সাহায্যে সাধনার মাধ্যমে আত্মিক শক্তি লাভ করার চেষ্টা করেন, তারাই বাউল।
কেউ কেউ বলেছেন, সংস্কৃত “বাতুল” শব্দ থেকে বাউল শব্দটির উৎপত্তি, এই গবেষকদের মতে- যে সব লোক প্রকৃতই পাগল, তাই তারা কোনো সামাজিক বা ধর্মের কোনো বিধিনিষেধ মানে না, তারাই বাউল। কেউ বলেছেন “বাউর” শব্দ থেকে বাউলের উৎপত্তি, এর অর্থ এলো-মেলো, বিশৃঙ্খল, পাগল।
আরও দেখুনঃ