লালন শাহ এর গান মন বুঝি মদ খেয়ে মাতাল হয়েছে –আজকের আয়োজন
Table of Contents
মন বুঝি মদ খেয়ে মাতাল হয়েছে
মন বুঝি মদ খেয়ে মাতাল হয়েছে।
জানে না কাচির খবর রঙমহলের নিকাশ নিচ্ছে ॥
ঠিক পড়ে না কুড়ো কাঠা
মূলে ধরে সতের গণ্ডা
অকারণ খাটিয়ে মনটা
পাগলামি প্রকাশ করতেছে ॥
যে জমির নাই আড়া-দিঘলতা
কীরূপ কালি করে সেথা
শুনি চৌদ্দ পোয়ার কথা
কুড়ো কাঠা কই আন্দাজে ॥
কৃষ্ণদাস পণ্ডিত ভাল
কৃষ্ণলীলার সীমা দিল
তার পণ্ডিতি চূর্ণ হ’ল
টুনটুনি এক পাখির কাছে ॥
বামন হয়ে চাঁদ ধরতে যায়
অমনি আমার মন মনুরায়
লালন বলে কবে কোথায়
এমন পাগল কে দেখেছে ॥
লালনের ঠাকুর পরিবারের সাথে সম্পর্ক
কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারের অনেকের সঙ্গে লালনের পরিচয় ছিল বলে বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া যায়। বিরাহিমপুর পরগনায় ঠাকুর পরিবারের জমিদারিতে ছিল তার বসবাস এবং ঠাকুর-জমিদারদের প্রজা ছিলেন তিনি। উনিশ শতকের শিক্ষিত সমাজে তার প্রচার ও গ্রহণযোগ্যতার পেছনে ঠাকুর পরিবার বড় ভূমিকা রাখেন।
কিন্তু এই ঠাকুরদের সঙ্গে লালনের একবার সংঘর্ষ ঘটে। তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের কুষ্টিয়ার কুমারখালির কাঙাল হরিনাথ মজুমদার গ্রামবার্তা প্রকাশিকা নামে একটি পত্রিকা প্রকাশ করতেন। এরই একটি সংখ্যায় ঠাকুর-জমিদারদের প্রজাপীড়নের সংবাদ ও তথ্য প্রকাশের সূত্র ধরে উচ্চপদস্থ ইংরেজ কর্মকর্তারা বিষয়টির তদন্তে প্রত্যক্ষ অনুসন্ধানে আসেন।
এতে করে কাঙাল হরিনাথ মজুমদারের উপর বেজায় ক্ষুব্ধ -হয়ে ওঠেন ঠাকুর-জমিদারেরা। তাঁকে শায়েস্তা করার উদ্দেশ্যে লাঠিয়াল পাঠালে শিষ্যদের নিয়ে লালন সশস্ত্রভাবে জমিদারের লাঠিয়ালদের মোকাবিলা করেন এবং লাঠিয়াল বাহিনী পালিয়ে যায়। এর পর থেকে কাঙাল হরিনাথকে বিভিন্নভাবে রক্ষা করেছেন লালন।
লালনের জীবদ্দশায় তার একমাত্র স্কেচটি তৈরী করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভ্রাতা জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর। লালনের মৃত্যুর বছরখানেক আগে ৫ মে ১৮৮৯ সালে পদ্মায় তার বোটে বসিয়ে তিনি এই পেন্সিল স্কেচটি করেন- যা ভারতীয় জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে। যদিও অনেকের দাবী এই স্কেচটিতে লালনের আসল চেহারা ফুটে ওঠেনি।
আরও দেখুন :