লালন শাহ এর গান ই মানুষে মানুষ আছে সর্বদা রসে খেলিছে সাঁতা – নিয়ে আজকের আয়োজন।
Table of Contents
এই মানুষে মানুষ আছে সর্বদা রসে খেলিছে সাঁতার
এই মানুষে মানুষ আছে সর্বদা রসে খেলিছে সাঁতার।
সেই রসরাজ করিছে বিরাজ শম্ভুরসের মাঝ করে দীপ্তকার ॥
রস না জেনে রসিক যারা
তারা ধরতে চায় অধরা
যায় না সে চাঁদ ধরা, মিছে শ্রম করা
দৃষ্টি হয় সেতারা গম্ভূ বুঝা ভার ॥
নিরন্তর সাঁই খেলিছে রসে
চিনিতে বালিতে রয়েছে মিশে
হস্তী না পায় দিশে, তথা চেউটি এসে
বেওড়া করে সে যে সাধন পূর্বাপর ॥
মহারসে মত্ত রসবিহারী
সেই নৌকায় সাঁই রসের কাণ্ডারি
যার হাতে রস মুরারী, মুখে রসেশ্বরী
লালন কয় প্রেম তারই অখণ্ড শিখর ॥

বিশ্ব সাহিত্যে প্রভাব
লালনের গান ও দর্শনের দ্বারা অনেক বিশ্বখ্যাত কবি, সাহিত্যিক, দার্শনিক প্রভাবিত হয়েছেন। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ লালনের মৃত্যুর ২ বছর পর তার আখড়া বাড়িতে যান এবং লালনের দর্শনে প্রভাবিত হয়ে ১৫০টি গান রচনা করেন। তার বিভিন্ন বক্তৃতা ও রচনায় তিনি লালনের প্রসঙ্গ তুলে ধরেছেন। লালনের মানবতাবাদী দর্শনে প্রভাবিত হয়েছেন সাম্যবাদী কবি কাজী নজরুল ইসলাম।
মার্কিন কবি এলেন গিন্সবার্গ লালনের দর্শনে প্রভাবিত হন এবং তার রচনাবলিতেও লালনের রচনাশৈলীর অনুকরণ দেখা যায়। তিনি আফটার লালন নামে একটি কবিতাও রচনা করেন।লালনের সংগীত ও ধর্ম-দর্শন নিয়ে দেশ-বিদেশে নানা গবেষণা হয়েছে ও হচ্ছে। ১৯৬৩ ছেউড়িয়ায় আখড়া বাড়ি ঘিরে লালন লোকসাহিত্য কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়।
এরপর লালন লোকসাহিত্য কেন্দ্রের বিলুপ্তি ঘটিয়ে ১৯৭৮ সালে শিল্পকলা একাডেমীর অধীনে প্রতিষ্ঠিত হয় লালন একাডেমী।তার মৃত্যুদিবসে ছেউড়িয়ার আখড়ায় স্মরণ উৎসব হয়। দেশ-বিদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে অসংখ্য মানুষ লালন স্মরণোৎসব ও দোল পূর্ণিমায় এই আধ্যাত্মিক সাধকের দর্শন অনুস্মরণ করতে প্রতি বছর এখানে এসে থাকেন।
২০১০ সাল থেকে এখানে পাঁচ দিনব্যাপী উৎসব হচ্ছে। এই অনুষ্ঠানটি “লালন উৎসব” হিসেবে পরিচিত। ২০১২ সালে এখানে ১২২তম লালন উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
আরও দেখুন :