লালন শাহ এর গান আজব রঙ ফকিরি সাদা সোহাগিনী সাঁই – নিয়ে আজকের আয়োজন।
Table of Contents
আজব রঙ ফকিরি সাদা সোহাগিনী সাঁই
আজব রঙ ফকিরি সাদা সোহাগিনী সাঁই ।
ও তার চুড়ি-শাড়ি ফকিরি ভেদ কে বুঝিবে তাই ॥
সর্বকেশী মুখে দাড়ি
পরনে তার চুড়ি-শাড়ি
কোথা হতে এল এ সিঁড়ি
জানিতে উচিত চাই ॥
ফকিরি গোরের মাঝার
দেখ রে করিয়ে বিচার
সাদা সোহাগিনী সবার উপর
আধ ঘর শুনতে পাই ॥
সাদা-সোহাগিনীর ভাবে
প্রকৃতি হইতে হবে
লালন কয় মন পাবি তবে
ভাবসমুদ্রে থাই ॥
লালন শাহ এর ঠাকুর পরিবারের সাথে সম্পর্ক
কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর-পরিবারের অনেকের সঙ্গে লালনের পরিচয় ছিল বলে বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া যায়। বিরাহিমপুর পরগনায় ঠাকুর-পরিবারের জমিদারিতে ছিল তার বসবাস এবং ঠাকুর-জমিদারদের প্রজা ছিলেন তিনি। উনিশ শতকের শিক্ষিত সমাজে তার প্রচার ও গ্রহণযোগ্যতার পেছনে ঠাকুর পরিবার বড় ভূমিকা রাখেন।
কিন্তু এই ঠাকুরদের সঙ্গে লালনের একবার সংঘর্ষ ঘটে। তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের কুষ্টিয়ার কুমারখালির কাঙাল হরিনাথ মজুমদার গ্রামবার্তা প্রকাশিকা নামে একটি পত্রিকা প্রকাশ করতেন। এরই একটি সংখ্যায় ঠাকুর-জমিদারদের প্রজাপীড়নের সংবাদ ও তথ্য প্রকাশের সূত্র ধরে উচ্চপদস্থ ইংরেজ কর্মকর্তারা বিষয়টির তদন্তে প্রত্যক্ষ অনুসন্ধানে আসেন। এতে করে কাঙাল হরিনাথ মজুমদারের উপর বেজায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন ঠাকুর-জমিদারেরা।
তাঁকে শায়েস্তা করার উদ্দেশ্যে লাঠিয়াল পাঠালে শিষ্যদের নিয়ে লালন সশস্ত্রভাবে জমিদারের লাঠিয়ালদের মোকাবিলা করেন এবং লাঠিয়াল বাহিনী পালিয়ে যায়। এর পর থেকে কাঙাল হরিনাথকে বিভিন্নভাবে রক্ষা করেছেন লালন। লালনের জীবদ্দশায় তার একমাত্র স্কেচটি তৈরী করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভ্রাতা জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর।
লালনের মৃত্যুর বছরখানেক আগে ৫ মে ১৮৮৯ সালে পদ্মায় তার বোটে বসিয়ে তিনি এই পেন্সিল স্কেচটি করেন- যা ভারতীয় জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে। যদিও অনেকের দাবী এই স্কেচটিতে লালনের আসল চেহারা ফুটে ওঠেনি।
আরও দেখুন :