সরোবরে আসন করে রয়েছে আনন্দময়-লালন শাহ

লালন শাহ এর গান সরোবরে আসন করে রয়েছে আনন্দময়- আজকের আয়োজন

সরোবরে আসন করে রয়েছে আনন্দময়

 

সরোবরে আসন করে রয়েছে আনন্দময়-লালন শাহ

সরোবরে আসন করে রয়েছে আনন্দময়।

জীবন শূন্য সভায় মান্য স্বয়ং ব্রহ্মা তার মাথায় ॥

চক্ষু আছে নাহি দেখে

তিন মরা একত্রে থাকে

পরের মুখে মুখ লাগায়ে

মরম কথা কয় ॥

একে মরা নাই তার জীবন

তার পেটের মধ্যে জ্যান্ত একজন

সাধকেতে সাধে যখন

ডাকলে মানুষ কথা কয় ॥

আশেকে করছে লীলা ভবের পরে

দেবের দেব পূজেছে তারে

পদ নাই সে চলে ফেরে

রসিকের সভায় ॥

ঐ পিরিতে সবাই মেতে

বিলাচ্ছে প্রেম হাতে হাতে

ফকির লালন বলে ঐ পিরিতে

মজেছে আপন ইচ্ছায় ॥

সরোবরে আসন করে রয়েছে আনন্দময়-লালন শাহ

 

লালনের গানের সংগ্রহ

লালনের গান “লালনগীতি” বা কখনও “লালন সংগীত” হিসেবে প্রসিদ্ধ। লালন মুখে মুখে গান রচনা করতেন এবং সুর করে পরিবেশন করতেন। এ ভাবেই তার বিশাল গান রচনার ভাণ্ডার গড়ে ওঠে। তিনি সহস্রাধিক গান রচনা করেছেন বলে ধারণা করা হয়।  তবে তিনি নিজে তা লিপিবদ্ধ করেন নি।

তার শিষ্যরা গান মনে রাখতো আর পরবর্তীকালে লিপিকার তা লিপিবদ্ধ করতেন। আর এতে করে তার অনেক গানই লিপিবদ্ধ করা হয় নি বলে ধারণা করা হয়।বাউলদের জন্য তিনি যেসব গান রচনা করেন, তা কালে-কালে এত জনপ্রিয়তা লাভ করে যে মানুষ এর মুখে মুখে তা পুরো বাংলায় ছড়িয়ে পড়ে।

কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লালনের গানে প্রভাবিত হয়ে, প্রবাসী পত্রিকার ‘হারামণি’ বিভাগে লালনের কুড়িটি গান প্রকাশ করেন।মুহম্মদ মনসুরউদ্দিন একাই তিন শতাধিক লালন গীতি সংগ্রহ করেছেন যা তার হারামণি গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে। এ ছাড়াও তার অন্য দুটি গ্রন্থের শিরোনাম যথাক্রমে ‘লালন ফকিরের গান’ এবং ‘লালন গীতিকা’ যাতে বহু লালন গীতি সংকলিত হয়েছে।

জ্যোতিরিন্দ্রিনাথ ঠাকুর সম্পাদিত ‘বীণা’, ‘বাদিনী’ পত্রিকায় ৭ম সংখ্যা ২ ভাগ (মাঘ) ১৩০৫-এ ‘পারমার্থিক গান’ শিরোনামে লালনের ‘ক্ষম অপরাধ ও দীননাথ’ গানটি স্বরলিপিসহ প্রকাশিত হয়। এ পত্রিকায় ৮ম সংখ্যা ২ ভাগ (ফাগুন) ১৩০৫-এ প্রকাশিত আরেকটি লালনগীতি ‘কথা কয় কাছে দেখা যায় না’ দুটি গানেরই স্বরলিপি করেন ইন্দিরা দেবী। প্রেমদাস বৈরাগী গীত এ লালন গীতি সংগ্রহ করেছিলেন মুহম্মদ মনসুরউদ্দীন এবং তা মাসিক প্রবাসী পত্রিকার হারামণি অংশে প্রকাশিত হয়েছিল।

 

সরোবরে আসন করে রয়েছে আনন্দময়-লালন শাহ

 

লালনের গানের কথা, সুর ও দর্শনকে বিভিন্ন গবেষক বিভিন্নভাবে উল্লেখ করেছেন। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, লালন গবেষক আবুল আহসান চৌধুরী বলেন, অনেক গান যাতে লালন বলে কথাটির উল্লেখ আছে তার সবই প্রকৃতপক্ষে লালনের নয়। মন্টু শাহ নামের একজন বাউল, তিন খণ্ডের একটি বই প্রকাশ করেছেন যাতে তিনি মনিরুদ্দিন শাহ নামক লালনের সরাসরি শিষ্যের সংগৃহীত লালন সংগীতগুলো প্রকাশ করেছেন।

আরও দেখুন :

সরোবরে আসন করে রয়েছে আনন্দময়-লালন শাহ

 

Leave a Comment