আয় কে যাবি ওপারে – লালন শাহ

লালন শাহ এর গান আয় কে যাবি ওপারে – নিয়ে আজকের আয়োজন। লালন (১৭ অক্টোবর ১৭৭৪ – ১৭ অক্টোবর ১৮৯০) ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী একজন বাঙালি; যিনি ফকির লালন, লালন সাঁই, লালন শাহ, মহাত্মা লালন ইত্যাদি নামেও পরিচিত।

তিনি একাধারে একজন আধ্যাত্মিক ফকির সাধক, মানবতাবাদী, সমাজ সংস্কারক এবং দার্শনিক। তিনি অসংখ্য গানের গীতিকার, সুরকার ও গায়ক ছিলেন। লালনকে বাউল গানের অগ্রদূতদের অন্যতম একজন হিসেবে বিবেচনা করা হয় এবং তার গান উনিশ শতকে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করে।

আয় কে যাবি ওপারে

 

আয় কে যাবি ওপারে - লালন শাহ

আয় কে যাবি ওপারে ।
দয়ালচাঁদ মোর দিচ্ছে খেওয়া অপার সাগরে ॥

যে দিবে ঐ নামের দোহাই

তারে পার করবেন গো সাঁই

এমন দয়াল আর কেহ নাই

ভব সংসারে ॥
পার করে সে জগৎ বেড়ি

নেয় না কারো পারের কড়ি

সেরে সরে মনের দেড়ি

ভার দে না তারে ॥
ঐ শ্রীচরণে দিয়ে ভার

কত পাপী হইল পার

সিরাজ সাঁই কয় লালন তোমার

বিগার যায় না রে ॥

 

শাহ আবদুল করিমের গান
আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

লালন শাহ এর গানের সংগ্রহ

লালনের গান “লালনগীতি” বা কখনও “লালন সংগীত” হিসেবে প্রসিদ্ধ। লালন মুখে মুখে গান রচনা করতেন এবং সুর করে পরিবেশন করতেন। এ ভাবেই তার বিশাল গান-রচনার ভাণ্ডার গড়ে ওঠে। তিনি সহস্রাধিক গান রচনা করেছেন বলে ধারণা করা হয়। তবে তিনি নিজে তা লিপিবদ্ধ করেন নি। তার শিষ্যরা গান মনে রাখতো আর পরবর্তীকালে লিপিকার তা লিপিবদ্ধ করতেন। আর এতে করে তার অনেক গানই লিপিবদ্ধ করা হয় নি বলে ধারণা করা হয়

বাউলদের জন্য তিনি যেসব গান রচনা করেন, তা কালে-কালে এত জনপ্রিয়তা লাভ করে যে মানুষ এর মুখে মুখে তা পুরো বাংলায় ছড়িয়ে পড়ে। কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লালনের গানে প্রভাবিত হয়ে, প্রবাসী পত্রিকার ‘হারামণি’ বিভাগে লালনের কুড়িটি গান প্রকাশ করেন। মুহম্মদ মনসুরউদ্দিন একাই তিন শতাধিক লালন গীতি সংগ্রহ করেছেন যা তার হারামণি গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে।

এ ছাড়াও তার অন্য দুটি গ্রন্থের শিরোনাম যথাক্রমে ‘লালন ফকিরের গান’ এবং ‘লালন গীতিকা’ যাতে বহু লালন গীতি সংকলিত হয়েছে। জ্যোতিরিন্দ্রিনাথ ঠাকুর সম্পাদিত ‘বীণা’, ‘বাদিনী’ পত্রিকায় ৭ম সংখ্যা ২ ভাগ (মাঘ) ১৩০৫-এ ‘পারমার্থিক গান’ শিরোনামে লালনের ‘ক্ষম অপরাধ ও দীননাথ’ গানটি স্বরলিপিসহ প্রকাশিত হয়। এ পত্রিকায় ৮ম সংখ্যা ২ ভাগ (ফাগুন) ১৩০৫-এ প্রকাশিত আরেকটি লালনগীতি ‘কথা কয় কাছে দেখা যায় না’ দুটি গানেরই স্বরলিপি করেন ইন্দিরা দেবী।

প্রেমদাস বৈরাগী গীত এ লালন গীতি সংগ্রহ করেছিলেন মুহম্মদ মনসুরউদ্দীন এবং তা মাসিক প্রবাসী পত্রিকার হারামণি অংশে প্রকাশিত হয়েছিল।

লালনের গানের কথা, সুর ও দর্শনকে বিভিন্ন গবেষক বিভিন্নভাবে উল্লেখ করেছেন। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, লালন গবেষক আবুল আহসান চৌধুরী বলেন, অনেক গান যাতে লালন বলে কথাটির উল্লেখ আছে তার সবই প্রকৃতপক্ষে লালনের নয়।

 

আয় কে যাবি ওপারে - লালন শাহ

 

মন্টু শাহ নামের একজন বাউল, তিন খণ্ডের একটি বই প্রকাশ করেছেন যাতে তিনি মনিরুদ্দিন শাহ নামক লালনের সরাসরি শিষ্যের সংগৃহীত লালন সংগীতগুলো প্রকাশ করেছেন।

আরও দেখুন :

Leave a Comment